Monday, October 12, 2015

শারদ প্রাতে ‘সাহিত্য অঞ্জলি'




শারদ প্রাতে ‘সাহিত্য অঞ্জলি’



..........................................................................................................................................................


প্রথম বর্ষ,  প্রথম সংখ্যা
এ সংখ্যার সূচি

কবিতা

·        পার্থ দাশগুপ্ত                             কেটে যাক আরও কিছু দিন
·        আসিফ ইকবাল ইরন                    কিছু খুচরো কষ্ট               
·        সীমা ব্যানার্জ্জী রায়                      ওতোর চাপান                
·        মোহাম্মদ আন্‌ওয়ারুল কবীর            সম্ভাবনার অংক              
·        তামান্না রুবায়েত                         নিয়তির ভেল্কিবাজ          
·        এমদাদুল হক তুহিন                     বিষণ্ন                        

গল্প    তাহমিনা শাম্মী                      কলমিলতার নাকছাবি                       
           
 ...................................................................................................



শারদ প্রাতেই ‘সাহিত্য অঞ্জলি’ ব্লগের যাত্রা শুরু হলো। ফেসবুক গ্রুপ ‘সাহিত্য অঞ্জলি’র বাছাই করা গল্প, কবিতা, ছড়া, রম্য রচনা, ভ্রমণকাহিনীসহ সংগৃহীত লেখা নিয়ে প্রকাশিত হবে ‘সাহিত্য অঞ্জলি’ ব্লগ। এটিই প্রথম সংখ্যা। এরপর নির্দিষ্ট একটা মেয়াদ অন্তর এই ব্লগ প্রকাশিত হবে।

সে কারণে আমরা চাই, যারা গল্প, কবিতা, ছড়া, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী লেখালেখি করেন, তারা অনুগ্রহ করে সাহিত্য বিষয়ক ফেসবুক গ্রুপ ‘সাহিত্য অঞ্জলি’তে নিয়মিত লিখুন। গ্রুপটিকে সমৃদ্ধ করুন। এ গ্রুপ সবার। সবাই আমরা ভাগীদার। লিখুন, আর আমাদের আরো অনুপ্রাণিত করুন। ধন্যবাদ

- সাহিত্য অঞ্জলি, ব্লগ





কেটে যাক আরও কিছু দিন ...
 পার্থ দাশগুপ্ত

দূর আকাশের মত
বল তুমি আর কত
থেকে যাবে অধরা আমার!



পাহাড় চূড়ায় উঠে
পারব তোমাকে ছুঁতে
                                                         
এই ভুল ভাঙে বার বার!


হাওয়াই জাহাজে ভেসে
পৌঁছে মেঘের দেশে
হয়ত তোমার কাছাকাছি,
একদিন হবে যাওয়া
সে যেন আকাশ পাওয়া


সেই ভুল নিয়ে আজও বাঁচি!
স্মৃতির কলমে কালি
ভরেও মন যে খালি
থেকে যায় আঁকিবুঁকি মেখে,
নদীর স্রোতের মত
অতীতের কথা যত
বয়ে যায় মোহানার দিকে!
 

যদি পার এস ফিরে
সময়ের বাহুডোরে
নাইবা হলাম মোরা লীন,
বুকে ধরে রূপকথা
ভুলে না পাওয়ার ব্যথা
কেটে যাক আরও কিছু দিন!

 .......................

কিছু খুচরো কষ্ট
আসিফ ইকবাল ইরন

আজকাল অনিদ্রা অাষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখে আমাকে
বিছানায় হেলান দিতেই
ভেসে ওঠে কিছু খুচরো দুঃসহ স্মৃতি
ধীরে ধীরে আমাকে নিয়ে যায় পুরাকীর্তির মাঠে
বৃদ্ধ আঙুল দেখিয়ে বলে-
এই, এখানে জল দিয়ে তৈরি হয় দুঃখের আকর।

আজ থেকে দু’হেমন্ত আগেও এমন ছিলাম না
যদিও তুমি জানতে আমি রাত জাগি
এবং একান্ত তা শুধুই কবিতার জন্য
আর সেই কবিতার একনিষ্ঠ শ্রোতা ছিলে তুমি।

চোখ জুড়ে আজ ভিড় করেছে রাজ্যের সমস্ত ঘুম
ঘুমে চোখ টলটল
দেখলে মনে হবে এইমাত্র যেন পান করেছি পৃথিবীর তাবৎ শরাব
যদিও জানি শরাব আর মৃত্যু পরস্পর পরস্পরের খুবই কাছাকাছি থাকে।

আজ আমার চোখে ঘুম নেই
দু’চোখের পাতা এক হলেই ভেসে ওঠে কিছু খুচরো কষ্ট!!!

...............................................................................


ওতোর চাপান
সীমা ব্যানার্জ্জী রায়

যদি প্রশ্ন করো- আছি কেমন আমি?
'বলব'- আইভি নিয়ে এইতো ভাল লাগছে।


ঠিক যেমনি করে অসময়ের বর্ষা অবিরাম
ঢেলে ঢেলে ঘাটতি পুষিয়ে দিচ্ছে-
ঠিক তেমনি করে সময়ের অক্সিজেন পুরো
কোষে কোষে নিঃশব্দে বয়ে চলেছে।


আজকাল ধ্যান-ধারণার বিশ্বাস সবই চড়া
তারে বাঁধা থাকে-
তবু গান শুনি চুপকথাদের গন্ধে
ভরা সুরের লক্ষ-পাকে।

মনগীতা আউড়ে বলে দেয় কখন-
“কর্ম্মন্যে বাধিকারন্তে মা ফলেষু কদাচন।

.....................................


সম্ভাবনার অংক
মোহাম্মদ আন্ওয়ারুল কবীর

বিগব্যাং - আকস্মিক মহাবিষ্ফোরণ
জন্ম নেয় নতুন গ্রহ - আমাদের এ পৃথিবী


সেই থেকে আবর্তিত নিজস্ব কক্ষপথে -
বিজ্ঞান তাই বলে ।


মাতৃজরায়ুতে বিস্ফোরণ - জন্ম নেয় মানব ভ্রুণ
ডিম্বানু-শুক্রাণু নিষিক্তকরণ
সম্ভাবনা অংকে নেহায়েতই নগণ্য


তবু এভাবেই আমি, তুমি আর সে পৃথিবীর পথে
আমাদের ইচ্ছে-অনিচ্ছের তোয়াক্কা না করেই।


ঝুলন্ত সময় রজ্জুতে আবর্তিত আমরা
নিয়তির খেয়াল - বকাট্টা ঘুড়ির মতোন
একে একে হারিয়ে যাই একদিন
সম্ভাবনার অংকে শতভাগ নিশ্চিত।
            ........................


নিয়তির ভেল্কিবাজ
তামান্না রুবায়েত

সময়ের ওড়াল সেতুতে তোমার হাঁটা
বড়ই নাজুক তুমি অসহায় ক্রীড়নক
তুমি মানব নতজানু রাজা ঈদিপাস।


যতই করো সাধনা নেপোলিয়ন প্রতিজ্ঞায়
লক্ষ্যে কি পারবে পৌঁছতে নিয়তির বৈরিতায়!


মন আর মনন বন্ধক তোমার
জিন কোডে আঁকা থাকে নিয়তি মানচিত্র
কি করে এড়াবে তুমি তা' মানব!

মিছেই অগ্নিসাক্ষী, শাস্ত্র দোহাই
যজ্ঞ আর পূজার নৈবেদ্য


নিয়তির টানেই অনিচ্ছার উজান স্রোতে 
মানব তোমার বাস।

জীবন সে তো নিয়তির ভেল্কিবাজ!
 .......................

বিষণ্ণ
এমদাদুল হক তুহিন

ঈশ্বর না জানুক, আমি ঠিকই জানি
কতটা কষ্ট পেলে মানুষ পশু হয়ে যায়
কতটা দূষিত হলে ফুলের ঘ্রাণও বিষাক্ত হয়ে ওঠে


কোন সে অভিমানে, কোন সে অধিকারহীনতায়
কষ্টের ফুল ফোঁটে- কোন সে সীমার প্রাচীরে
অভিমান পিষ্ট হয়ে ধূলি হয়ে যায়।


চির জ্ঞানপিপাসু হৃদয়, কতটা আশাহত হলে
ভেঙেপড়া দানব হলে, ঐশ্বর্য অহংকার বলে
কতটা দূরে ঠেলে দিলে, কতটা বন্দিজীবন ফলে
প্রেমহীনতায় চিরবিরহ উৎসাহী মূল-সমূলে।


আর কেউ না-ই বা জানুক, আমি তো জানি
ঈশ্বর হওয়ার প্রবল তাড়না এখনও তাদের হৃদয়
অথচ বিছানায় পরনারী ও মদের পেয়ালা!


কষ্ট নিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে অহংকারী তকমা লেগেছে গায়
বহুবছর পরে জীবিত কিংবা জীবদ্দশায়
আমাকেও জেনো, ভুল শুধু আমার নয়-
বহুলাংশেই দায়ী ছিল তোমাদের ভুল ওই সমাজ!

        ………………


ভালোবাসার গল্প- 

কলমিলতার নাকছাবি
তাহমিনা শাম্মী

কলমিলতার মনটা আজ বেশ ফুরফুরে, বর্ষাকাল এলেই তার এমন হয়। ঘরে প্রতিদিন খাবার আসে। কারণ, তার স্বামী রাস্তা মেরামতের গ্রুপে খোদাইয়ের কাজ করে। আর এ দেশে রাস্তা মেরামতের কাজ তো বর্ষাকালেই হয়। একদিক দিয়ে রাস্তা মেরামত করা হয়, অন্য দিক দিয়ে ভেঙে যায়। রাস্তা ভাঙলে পরের বছর আবার কাজ আসে। ওই যে তালতলা খাঁ বাড়ির সামনের রাস্তাটা, ওটা তো প্রতিবছরই ভাঙে। রাস্তার মাটি বর্ষার বানের স্রোত কিছুতেই সহ্য করতে পারে না। ওখানে একটা কালভার্ট দিয়ে রাস্তা বাঁধলেই হয়তো জলের গতি কিছুটা স্বাভাবিক হতো। রাস্তাটাও আর ভাঙতো না। এটা কি চেয়ারম্যান নিজে বোঝে না? বোঝে। আর ঠিকাদারও বোঝে। কিন্তু...!

থাক, এই কিন্তু নিয়ে আর আলোচনা নাই বা করলাম। এবার কলমিলতার কথায় আসা যাক। এতোক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝেই গেছেন কলমিলতার মনে এতো প্রফুল্লতার কারণ। এখন বর্ষাকাল। আর তাই আকাশের মনটা আজ ভালো নেই। আকাশের এই মন খারাপ ব্যাপারটা কলমির ভারি পছন্দ। ওহ! বলা হয়নি, গ্রামের সবাই কলমিলতাকে কলমি বলে ডাকে। গতকাল সে বৃষ্টির জল ধরে রেখেছিল। আজ একটু সময় পেয়ে তাই দিয়ে সে তার নাকফুলটাকে বেশ ঘষেমেজে পরিস্কার করছে। এই নাকফুলটা কলমির গর্ব। সেই ছোট বয়সে নাক ফোড়াবার সময় কে একজন বলে দিয়েছিল, মেয়েরা নাকফুল না পড়লে স্বামীর অকল্যাণ হয়। কথাটা তার মাথার মধ্যে মন্ত্রের মতো গেঁথে গেছে। তাই যত বিপদই আসুক না কেন, সে তার নাকফুলটাকে কখনো বিক্রি করেনি। এটা তার বিয়ের নাকফুল। শ্বশুর মশাই দিয়েছিলেন। পুরো এক আনি সোনা আছে এতে। এ গ্রামে এতোবড় নাকফুল আর কারো নেই।



কলমি সারাদিন অপেক্ষায় থেকেছে, কখন তার স্বামী চান মিয়া বাজার নিয়ে আসবে। ঘরে চাল আছে আর আছে নুন ও মরিচ। তাই দিয়েই দুপুরে মা-মেয়েতে ভাত খেয়েছে। মেয়ে পারুল শুধু নুন মরিচ দিয়ে খেতে চায়নি, বার বার মায়ের কানের কাছে খুনখুন করেছে। কিন্তু কলমি আদর দিয়ে ঠিক খাইয়ে দিয়েছে। বলেছে, ‘রাইতে দেখিস তোর বাপে মাছ আনবো নে, তহন মাছের মুরাডা তোরেই দিমু নি’। পারুল তাতেই খুশি হয়ে ভাত খেয়ে নিয়েছে।

বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকশে মেঘেদের ভিড়ে চাঁদ মধ্য আকাশে যখন উঁকি দিচ্ছে, তখন চান মিয়াও ঢুলুঢুলু একজোড়া চোখ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো। ঠিকমতো দাঁড়াতে পর্যন্ত পারছে না। অবস্থা দেখে কলমির চোখ কপালে। সে দেখেই বুঝতে পারলো তার স্বামী কোথা থেকে এসেছে। তাই আর থাকতে না পেরে চিৎকার করে বলে উঠলো, ‘বাপে মাছ আনবো বইলা মাইয়া এহনো কিছু মুখে তুলে নাই। আর তুমি আইছো মদ খাইয়া, জুয়া খেইলা সব খোয়াইয়া সব্বনাশ কইরা!’
 
কলমির কথায় হঠাৎ-ই চানের শরীরে অশরীরী শক্তি এসে ভর করে। ‘মাগি আমার টাকা আমি খোয়াইছি, তাতে তোর বাপের কি?’ বলেই কলমিকে টানা একটা চড় মেরে ফেলে দিলো মাটিতে। তারপর সেখান থেকে তুলে আবার মার। প্রায় আধা ঘণ্টা বেধড়ক পিটিয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে।

কলমি সারারাত কেঁদেছে, মায়ের সাথে সাথে পারুলও কাঁদতে কাঁদতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফোলা চোখ নিয়েই হাত-মুখ ধুতে কলমি চলে গেল পুকুরঘাটে। পাশের বাড়ির বকুলের মা কলমিকে বললো, ‘কাইল নাকি চান তোরে খুব পিটাইছে?’

কলমি কোনো উত্তর করলো না।

এবার ওই নাকছাবিটা বেইচ্চা একটা শাড়ি কিনো। তোর দুইখান কাপড়ই তো ছিঁইড়্যা গেছে। আষাঢ় মাস তো যায় যায়। চান তোরে একটা কাপড়ও কিন্ন্যা দিলো না। অইডা বেচলে একটা শইস্যা দানা, নতুন নাকছাবিও পাবি আবার একটা শাড়িও পাবি।

কলমি সাথে সাথে বলে উঠলো, ‘আমার নাকছাবি দেখলে তোমাগো এতো হিংসা লাগে ক্যান? নাকছাবি পরি পারুলের বাপের মঙ্গলের লিগ্যা, ভাত কাপড়ের লিগ্যা না!’




1 comment:

  1. Best New Casinos in Las Vegas 2021 - MapYRO
    The best casino hotels in Las Vegas · The Wynn Hotel and 충주 출장마사지 Casino · The 강원도 출장마사지 Cosmopolitan of 여주 출장샵 Las Vegas · Red Rock Casino 영천 출장안마 Resort · The Cosmopolitan of 성남 출장안마 Las Vegas

    ReplyDelete